Ad Code

Responsive Advertisement

সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

চল মোজাহিদ প্রলয়ের মাঝে অটল হয়ে মোরা যুদ্ধ করি

নিয়ত কতটা পাওয়ারফুল একবার ভেবে দেখেন!

  • Khalidsaifullah778

 



নিয়ত কতটা পাওয়ারফুল একবার ভেবে দেখেন!!!

.

(ঘটনা নং- ১)

আসাদ সাহেবের মা চেয়েছিল ছেলেকে সুন্দরী বউ এনে দিবে সাথে ঘর ভর্তি ফার্নিচার নিবে মেয়ের পরিবার থেকে।কারণ যদি কখনো ছেলের সামর্থ্য না হয় ঘর ভর্তি ফার্নিচার কেনার। 

.

সত্যি সত্যি ছেলের জন্য সুন্দরী বউ আর বউ এর পরিবার থেকে ঘর ভর্তি ফার্নিচার তিনি ঠিক-ই এনেছেন কিন্তু যে ঘর সাজাতে এতকিছুর আয়োজন সে ঘর গ্যাস লিক হয়ে আগুনে জ্বলে-পুড়ে গেছে।

.

.

(ঘটনা নং-২)

রফিক সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা। ১৮ লাখ টাকা পেনশন পেয়েছেন। সম্পূর্ণ টাকা ব্যাংকে রেখেছেন যাতে ভবিষ্যতে রোগ ব্যাধি হলে যেন ডাঃ দেখাতে পারেন।ও হ্যাঁ মাস শেষে ১৮ হাজার তুলতে উনি কখনো ভুলেন না!

মাত্র ৪ বছরের মাথায় উনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেন।

.

.

(ঘটনা নং -৩)

আফসানা নিজের পায়ে না দাঁড়ানো পর্যন্ত নাকি বিয়েই করবে না। স্বামীর টাকায় নাকি সে চলবে না।

৪০ বছর হয়ে গেল মেয়েটার এখনো বিয়েই হলো না!

.

.

(ঘটনা নং-৪)

অনেক পড়ালেখা করে রুমি। ও বলে পড়ালেখা না করলে ভালো চাকরি জুটবে না। বিয়ের পর যদি স্বামী মারা যায় তখন তার কি হবে! ভবিষ্যতের কথা তো বলা যায় না!

হায় কি ভাগ্য বিয়ের ৫ বছর পর স্বামী মারা গেল!

.

.

নিয়ত কতটা পাওয়ারফুল দেখেন। উনাদের মত চরিত্ররা সবাই কিন্তু 

আমাদের আশেপাশেই আছে।

.

আসাদ সাহেব সুন্দর বউ আর ঘর ভর্তি ফার্নিচার ঠিকই পেলো কিন্তু ঘরটাই পুড়ে গেলো। রফিক সাহেব টাকা জমা রাখেন কারণ রোগ হবে বলে। দেখুন উনি নিজেই নিজের রোগকে কিভাবে ডেকে আনছেন!

.

আফসানার বর-ই জুটলো না বরের টাকায় চলা তো দূরের কথা।

রুমি চাকরি করে কারণ তার স্বামী মারা যাবে বলে।

.

উনারা কাজটা করার আগে নিজেরাই কিভাবে নিজেদের গতিকে ঠিক করে দিচ্ছে! তাদের কাজটা কিন্তু তাদের নিয়ত অনুযায়ীই এগিয়ে যাচ্ছে। উনারা যারা যা চেয়েছিল সবাই তাই পেয়েছে!

.

.

.

হাজেরা (র:) ইব্রাহীম (আঃ) কে বললেন, মানুষ নেই ঘর নেই পানি নেই গাছ নেই এমন জায়গায় আপনার স্ত্রী পুত্রকে একা ফেলে কোথায় চলে যাচ্ছেন!

আল্লাহ কি আপনাকে এমন করতে বলেছেন? ঠিক আছে আপনি যান। তিনি আমাদের ধ্বংস করবেন না!

.

দেখুন কি তাওয়াক্কুল! এই হজ্জেও হাজীরা সাফা-মারওয়া পাহাড় দৌড়াবে, জমজম কূপের পানি খাবে শুধুমাত্র তার এই তাওয়াক্কুলের কারণে! সুবহানাল্লাহ!

.

.

মূসা (আঃ) নিজ শহর ত্যাগ করলেন। ভাবলেন না কোথায় থাকবেন কি খাবেন। বরং বলে যাচ্ছেন নিশ্চয় আল্লাহ পথ দেখাবেন। আল্লাহ সুবহানু ওয়া তা'লা তাকে থাকার ব্যবস্থা করে তো দিলেনই সাথে জীবনসঙ্গীসহ ১০ বছর থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।

.

.

.

জানেন রফিক সাহেব কি বলেছিলো অপারেশনের পর, টাকাটা ব্যাংকে রেখেছিলাম বলেই আজকে অপারেশনের টাকাটা জুটলো না হলে বিছানায় থেকে মরতে হত। উনি উনার স্টেটমেন্ট হয়ত ভুলে গেছেন। উনি ব্যাংকে টাকা রেখেছিলেন এই বলে যে একসময় তার রোগ হবে!

.

.

আজকে আপনি আমি আমরা সবাই আল্লাহ কে ভয় করা বাদ দিয়ে ভয় করি রোগকে, ভয় করি টাকা না থাকাকে। আমরা কতটা নিচে চলে গেছি ভেবে দেখুন।

.

একবার এক ভাই বাড়ি বানাচ্ছেন, বলছিলেন যে উনি ভেন্টিলেটর দিচ্ছেন এই নিয়তে যে ফজরে দরজা জানালা বন্ধ থাকলে এই ভেন্টিলেটর দিয়ে ফজরের আজান শোনা যাবে। আমরা অনেকেই ভেন্টিলেটর লাগাই পিউর বাতাস পাবার জন্য, আর সেই ভাই তার এই নিয়তের কারণে হয়তো কত উচ্চতায় উঠে যাবেন। আর পিউর বাতাস তো উনি পাবেনই। এ কারণেই বলা হয়েছে, যে আখিরাতের নিয়ত করে দুনিয়া তার পায়ে লুটায়।

.

আপনি ছাত্র হলে পড়ালেখাটা আল্লাহর জন্য করুন, দাওয়াত এর নিয়তে করুন। চাকরিটা আল্লাহর জন্য করুন, হালাল রিজিকের জন্য করুন। মা-বাবা, বউ, বাচ্চার যত্ন নিন আল্লাহকে খুশি করতে। অন্য জন থেকে জুলুম করে না নিয়ে আল্লাহ থেকে খুঁজুন। নিয়ত করুন যেন আল্লাহ আপনাকে এতো বেশী দেন যাতে আপনি অন্য থেকে না খুঁজে উল্টো অন্যদের দু হাত ভরে দিতে পারেন। তাওয়াক্কুল রাখুন। ভাল ভাল নিয়ত করুন।

আপনি সবার থেকে সুখী হবেন। ইন-শা-আল্লাহ!

কবর যিয়ারতের সঠিক পদ্ধতি ও বিদআত সমূহ

 








কবর যিয়ারতের সঠিক পদ্ধতি, যিয়ারতের দুআ এবং এ ক্ষেত্রে বিদআত

▬▬▬🔸🔹🔸▬▬▬

🔰 কবর যিয়ারতের সুন্নত সম্মত নিয়ম হল:

◼ ১) মৃত্যু ও আখিরাতের কথা স্বরণ করার নিয়তে করব যিয়ারত করতে যাওয়া: আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে,


زَارَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ قَبْرَ أُمِّهِ فَبَكَى وَأَبْكَى مَنْ حَوْلَهُ ، ثُمَّ قَالَ : “ اسْتَأْذَنْتُ رَبِّي أَنْ أَزُورَ قَبْرَهَا فَأَذِنَ لِي ، وَاسْتَأْذَنْتُهُ أَنْ أَسْتَغْفِرَ لَهَا فَلَمْ يُؤْذَنْ لِي فَزُورُوا الْقُبُورَ ، فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الْمَوْتَ


“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মায়ের কবর যিয়ারত করতে গিয়ে কাঁদলেন এবং তাঁর সাথে যে সাহাবীগণ ছিলেন তারাও কাঁদলেন। অতঃপর তিনি বললেন,“আমি আমার মায়ের মাগফেরাতের জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম কিন্তু আমাকে সে অনুমতি প্রদান করা হয়নি। তবে আমি মায়ের কবর যিয়ারতের জন্যে আবেদন জানালে তিনি তা মঞ্জুর করেন। অতএব, তোমরা কবর যিয়ারত কর। কেননা কবর যিয়ারত করলে মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। ”[105]


অন্য বর্ণনায় রয়েছে, أَلا فَزُورُوهَا ، فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الآخِرَةَ 

“সুতরাং তোমরা কবর যিয়ারত কর, কেননা এতে আখিরাতের কথা স্বরণ হয়।”


◼ ২) কবর যিয়ারতের দুয়া পাঠ করা:  বুরাইদা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহাবীগণ কবর যিয়ারত করতে গেলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে এই দুয়াটি পড়তে বলতেন:


السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنْ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لَلَاحِقُونَ أَسْأَلُ اللَّهَ لَنَا وَلَكُمْ الْعَافِيَةَ


“কবর গৃহের হে মুমিন-মুসলিম অধিবাসীগণ,আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ চাইলে আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হব। আমি আমাদের জন্য এবং তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট নিরাপত্তা কামনা করছি। ”[106]

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কবর যিয়ারতের দুয়া হিসেবে আমাদের সমাজে একটি দুয়া ব্যাপকভাবে প্রচলিত রয়েছে। সেটি হল,


السَّلَامُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالْأَثَرِ


“হে কবরবাসীগণ,তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ তোমাদেরকে এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। তোমরা আমাদের আগে চলে গেছ। আমরা তোমাদের অনুগামী।” (তিরমিযী) কিন্তু এ হাদীসটি সনদগতভাবে দূর্বল-যেমনটি ইমাম আলবানী রাহ. যঈফ তিরমিযীতে উল্লেখ করেছেন। তাই সেটি না পড়ে পূর্বোল্লিখিত সহীহ মুসলিম সহ অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে সহীহ সনদে যে দুয়াগুলো বর্ণিত হয়েছে সেগুলো পড়ার চেষ্টা করা উচিৎ। 


◼ ৩. মৃতদের গুনাহ-খাতা ও ভুলত্রুটি মোচনের জন্য আল্লাহর নিকট দুয়া করা: কুরআনে আল্লাহ তায়ালা মৃতদের জন্য দুয়া শিখিয়েছেন। তিনি বলেন:


رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ


“হে আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে এবং আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করে দাও যারা ঈমানের সাথে আমাদের আগে (দুনিয়া) থেকে চলে গেছে। ”[107]

 আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন: وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ

“ক্ষমা প্রার্থনা কর নিজের জন্য এবং মুমিনদের জন্য। ”[108]


সুনানে আবূ দাঊদে বর্ণিত হয়েছে,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাফন ক্রিয়া শেষ করে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলতেন,


اسْتَغْفِرُوا لأَخِيكُمْ وَسَلُوا لَهُ التَّثْبِيتَ فَإِنَّهُ الآنَ يُسْأَلُ


“তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা চাও। দুয়া কর যেন সে স্থির থাকতে পারে। কারণ, তাকে এখনই প্রশ্ন করা হবে।”[109]

মোটকথা, মৃত ব্যক্তির জন্য কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দুয়া সমূহ পাঠ করার পাশাপাশি নিজের ভাষায় যতখুশি দুআ করতে হবে। পিতামতার জন্য সন্তানের দুয়া সবচেয়ে বেশি কার্যকর ইনশাআল্লাহ।


🔰 মৃতদের জন্য হাত তুলে দুয়া করা:


দুয়া করার ক্ষেত্রে হাত তুলে দুয়া করা জায়েয রয়েছে। যেমন উম্মুল মুমিনীন আয়িশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

أَنَّه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَارَ القُبُوْرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَدَعَا لِأَهْلِهَا

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাকী গোরস্থান যিয়ারতে গিয়ে কবরবাসীদের জন্য দুহাত তুলে দুয়া করলেন।” [110]


🔰 মৃতদের জন্য সম্মিলিতভাবে দুয়া করার বিধান:


তবে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার ব্যাপারে দলীল নাই। তাই অনেক আলেম কবর যিয়ারত করার সময় একজন দুয়া করবে আর বাকি সবাই ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলবে এভাবে সম্মিলিত দুয়াকে বিদয়াত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।


সউদী আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটির [111]ফতোয়া হল, “দুয়া একটি ইবাদত। আর ইবাদত দলীলের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং আল্লাহর বিধানের বাইরে কারও জন্য ইবাদত করা জায়েজ নয়। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এটি প্রমাণিত নয় যে, তিনি জানাযা শেষ করে সাহাবীদেরকে সাথে নিয়ে সম্মিলিতভাবে দুয়া করেছেন। এ ক্ষেত্রে যে জিনিসটি প্রমাণিত তা হল, মৃত ব্যক্তিকে কবর দেয়া সম্পন্ন হলে তিনি সাহাবীদেরকে লক্ষ্য করে বলতেন, “তোমাদের ভাইকে এখনই প্রশ্ন করা হবে। অত:এব দুয়া কর যেন সে (প্রশ্নোত্তরের সময়) দৃঢ় থাকতে পারে।”  তাহলে এ থেকে প্রমাণিত হল যে, জানাযার সালাত শেষ করে সম্মিলিতভাবে দুয়া করা জায়েয নয় এবং এটি একটি বিদয়াত।

----------------------

টিকা:

[105] সহীহ মুসলিম, হা/৯৭৬, মুসতাদরাক আলাস সাহীহাইন, অধ্যায়: কিতাবুল জানায়েয, অনুচ্ছেদ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক তাঁর মায়ের কবর যিয়ারত করা। হা/১৪৩০

[106] সহীহ মুসলিম,অধ্যায়ঃ গোরস্থানে প্রবেশকালে কী বলতে হয়? হাদীস নং ১৬২০

[107] সূরা হাশর: ৫৯

[108] সূরা মুহাম্মাদ: ৪৭

[109] সুনান আবূ দাঊদ,অধ্যায়ঃ কবরের নিকট মাইয়্যেতের জন্য দুয়া-এস্তিগফার করা। হাদীস নং ২৮০৪ ৯ম খণ্ড ২৪ পৃষ্ঠা,সহীহ আবু দাঊদ, আলবানী।

[110] সহীহ মুসলিম, জানাযা অধ্যায় হা/৯৭৪

[111] সউদী আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটি


✒✒✒✒✒✒✒

উত্তর প্রদানে:

আবদুল্লাহিল হাদী বিন আবদুল জলীল

দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, KSA

একশোটি কবিরা গোনাহ

 



একশটি কবিরা গুনাহ ।

---------------------------------

🌀 কবিরা গুনাহ কাকে বলে?


কবিরা গুনাহ বলা হয় ঐ সকল বড় বড় পাপকর্ম সমূহকে যেগুলোতে নিন্মোক্ত কোন একটি বিষয় পাওয়া যাবে:


◉ যে সকল গুনাহের ব্যাপারে ইসলামি শরিয়তে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।

◉ যে সকল গুনাহের ব্যাপারে দুনিয়াতে নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগের কথা রয়েছে।

◉ যে সকল গুনাহের ব্যাপারে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা রাগ করেন।

◉ যে সকল কাজে আল্লাহ তায়ালা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ফেরেশতা মণ্ডলী লানত দেন।

◉ যে কাজের ব্যাপারে বলা হয়েছে, যে এমনটি করবে সে মুসলমানদের দলভুক্ত নয়।

◉ কিংবা যে কাজের ব্যাপারে আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

◉ সে সব বিষয়কে মুনাফেকির আলামত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

◉ যে কাজে ‘দ্বীন নাই’, ‘ঈমান নাই’ ইত্যাদি বলা হয়েছে।

◉ অথবা যে কাজকে আল্লাহ তায়ালা সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয় করা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


🌀 কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকার মর্যাদা:


১. মহান আল্লাহ বলেন:


إِن تَجْتَنِبُوا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَنُدْخِلْكُم مُّدْخَلًا كَرِيمًا


"যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমি তোমাদের (ছাট) গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।” (সূরা নিসা: ৩১)


২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:


الصلوات الخمس . والجمعة إلى الجمعة . ورمضان إلى رمضان . مكفرات ما بينهن

إذا اجتنب الكبائر


“পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমাযান থেকে আরেক রমাযান এতদুভয়ের মাঝে সংঘটিত সমস্ত পাপ রাশির জন্য কাফফারা স্বরূপ যায় যদি কবিরা গুনাহ সমূহ থেকে বেঁচে থাকা যায়।” (মুসলিম)


🌀 একশটি কবিরা গুনাহ (বড় পাপ):


নিম্নে একশটি কবিরা গুনাহ (বড় পাপ) তুলে ধরা হল:

1. আল্লাহর সাথে শিরক করা

2. নামায পরিত্যাগ কর

3. পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া

4. অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা

5. পিতা-মাতাকে অভিসম্পাত করা

6. যাদু-টোনা করা

7. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা

8. জিহাদের ময়দান থেকে থেকে পলায়ন

9. সতী-সাধ্বী মু‘মিন নারীর প্রতি অপবাদ

10. রোযা না রাখা

11. যাকাত আদায় না করা

12. ক্ষমতা থাকা সত্যেও হজ্জ আদায় না করা

13. যাদুর বৈধতায় বিশ্বাস করা

14. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া

15. অহংকার করা

16. চুগলখোরি করা (ঝগড়া লাগানোর উদ্দেশ্যে একজনের কথা আরেকজনের নিকট লাগোনো)

17. আত্মহত্যা করা

18. আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা

19. অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ ভক্ষণ করা

20. উপকার করে খোটা দান করা


21. মাদক বা নেশা দ্রব্য গ্রহণ করা।

22. মদ প্রস্তুত ও প্রচারে অংশ গ্রহণ করা।

23. জুয়া খেলা।

24. তকদির (ভাগ্য) অস্বীকার করা।

25. অদৃশ্যের খবর জানার দাবী করা।

26. গণকের কাছে ধর্না দেয়া বা গণকের কাছে অদৃশ্যের খবর জানতে চাওয়া।

27. পেশাব থেকে পবিত্র না থাকা।

28. রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামে মিথ্যা হাদিস বর্ণনা করা।

29. মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করা।

30. মিথ্যা কথা বলা।

31. মিথ্যা কসম খাওয়া।

32. মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করা।

33. জিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।

34. সমকামিতায় লিপ্ত হওয়া।

35. মানুষের গোপন কথা চুপিসারে শোনার চেষ্টা করা।

36. হিল্লা তথা চুক্তি ভিত্তিক বিয়ে করা।

37. যার জন্যে হিলা করা হয়।

38. মানুষের বংশ মর্যাদায় আঘাত হানা।

39. মৃতের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা।

40. মুসলিম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা।


41. কোন মুসলিমকে গালি দেয়া অথবা তার সাথে মারামারিতে লিপ্ত হওয়া।

42. খেলার ছলে কোন প্রাণীকে নিক্ষেপ যোগ্য অস্ত্রের লক্ষ্য বস্তু বানানো।

43. কোন অপরাধীকে আশ্রয় দান করা।

44. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করা।

45. ওজনে কম দেয়া।

46. ঝগড়া-বিবাদে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা।

47. ইসলামি আইনানুসারে বিচার বা শাসনকার্য পরিচালনা না করা।

48. জমিনের সীমানা পরিবর্তন করা বা পরের জমি জবর দখল করা।

49. গিবত তথা অসাক্ষাতে কারো দোষ চর্চা করা।

50. দাঁত চিকন করা।

51. সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে মুখমণ্ডলের চুল তুলে ফেলা বা চুল উঠিয়ে ভ্রু চিকন করা (ভ্রু প্লাগ করা)

52. মাথায় অতিরিক্ত/ চুল সংযোগ করা (পরচুলা ব্যবহার করা)

53. পুরুষের নারী বেশ ধারণ করা।

54. নারীর পুরুষ বেশ ধারণ করা।

55. বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কামনার দৃষ্টিতে তাকানো।

56. কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা।

57. পথিককে নিজের কাছে অতিরিক্ত পানি থাকার পরেও না দেয়া।

58. পুরুষের গোড়ালির নিচে ঝুলিয়ে পোশাক পরিধান করা।

59. মুসলিম শাসকের সাথে কৃত বয়াত বা আনুগত্যের শপথ ভঙ্গ করা।

60. ডাকাতি করা।


61. চুরি করা।

62. সুদ লেন-দেন করা, সুদ লেখা বা তাতে সাক্ষী থাকা।

63. ঘুষ লেন-দেন করা।

64. গনিমত (জিহাদের মাধ্যমে কাফেরদের নিকট থেকে প্রাপ্ত সম্পদ) বণ্টনের পূর্বে আত্মসাৎ করা।

65. স্ত্রীর পায়ু পথে যৌন ক্রিয়া করা।

66. জুলুম-অত্যাচার করা।

67. অস্ত্র দ্বারা ভয় দেখানো বা তা দ্বারা কাউকে ইঙ্গিত করা।

68. প্রতারণা বা ঠগবাজী করা।

69. রিয়া বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে সৎ আমল করা।

70. স্বর্ণ বা রৌপ্যের তৈরি পাত্র ব্যবহার করা।

71. পুরুষের রেশমি পোশাক এবং স্বর্ণ ও রৌপ্য পরিধান করা।

72. সাহাবিদেরকে গালি দেয়া।

73. নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে গমন করা।

74. মনিবের নিকট থেকে কৃতদাসের পলায়ন।

75. ভ্রান্ত মতবাদ জাহেলি রীতিনীতি অথবা বিদআতের প্রতি আহবান করা।

76. পবিত্র মক্কা ও মদিনায় কোন অপকর্ম বা দুষ্কৃতি করা।

77. কোন দুষ্কৃতিকারীকে প্রশ্রয় দেয়া।

78. আল্লাহর ব্যাপারে অনধিকার চর্চা করা।

79. বিনা প্রয়োজনে তালাক চাওয়া।

80. যে নারীর প্রতি তার স্বামী অসন্তুষ্ট।


81. স্বামীর অবাধ্য হওয়া।

82. স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর অবদান অস্বীকার করা।

83. স্বামী-স্ত্রীর মিলনের কথা জনসম্মুখে প্রকাশ করা।

84. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিবাদ সৃষ্টি করা।

85. বেশী বেশী অভিশাপ দেয়া।

86. বিশ্বাসঘাতকতা করা।

87. অঙ্গীকার পূরণ না করা।

88. আমানতের খিয়ানত করা।

89. শরীরে উল্কি অঙ্কন করা বা ট্যাটু করা।

90. ঋণ পরিশোধ না করা।

91. বদ মেজাজি ও এমন অহংকারী যে উপদেশ গ্রহণ করে না।

92. তাবিজ-কবজ, রিং, সুতা ইত্যাদি ঝুলানো।

93. পরীক্ষায় নকল করা।

94. ভেজাল পণ্য বিক্রয় করা।

95. ইচ্ছাকৃত ভাবে জেনে শুনে অন্যায় বিচার করা।

96. আল্লাহ বিধান ব্যতিরেকে বিচার-ফয়সালা করা।

97. পার্থিব উদ্দেশ্যে দীনী ইলম (দীনের জ্ঞান) অর্জন করা।

98. কোন ইলম (দীনের জ্ঞান) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জানা সত্যেও তা গোপন করা।

99. নিজের পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে দাবী করা।

100. আল্লাহর রাস্তায় বাধা দেয়া।


আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন এবং কু প্রবৃত্তি ও শয়তানের প্ররোচনায় কোন গুনাহ করে ফেললে আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমীন।


অনুবাদ ও গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্সে সেন্টার, সৌদি আরব ।

নফসের ধোকা ও তার কোড়বাণি

আপনি যতবার অন্যায়ভাবে আপন প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন, হোক সে ট্যারা চোখে গাইর-মাহরাম নারীর দিকে তাকানো অথবা মোবাইল বা টেলিভিশন বা ল্যাপটপের পর্দায় তাকিয়ে থেকে স্বল্পবসনা চরিত্রহীন নারীদের দেহের বিভঙ্গ দেখা, অথবা কোন কিছু অন্যায়ভাবে ভোগ করা। আপনি আপনার চাহিদাকে হারাম উপায়ে পূরণ করবেন, কিংবা যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির চাওয়া পূরণ করবেন, আপনি কিন্তু প্রতিনিয়ত আপনাকেই ধ্বংস করছেন।
প্রতিটি কামনা ও বাসনার প্রতি সাড়া আপনাকে নামিয়ে দিবে নিচে। আপনি বুঝতে পারবেন আপনার মনুষ্যত্বের পতন। আপনার নামাজে মনোযোগ কমে যাবে, ইবাদতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন, কুরআনের আয়াত শুনে অন্তরে তার কোন প্রভাব পড়বেনা, আল্লাহর কাছে কাঁদতে পারবেন না, হৃদয় পাপে শক্ত হয়ে যেতে থাকবে, হারাম থেকে বেচে থাকা কঠিন মনে হবে। আপনি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে প্রতিনিয়ত এইভাবেই নিজের জীবন ও ঈমানকে ক্রমশ ধ্বংস করতে থাকবেন।
!
যখন আপনি শয়তানের কথা একটু শুনতে শুরু করলেন, তখন আপনি তাকে সামান্য ক্ষমতা দেওয়া শুরু করলেন। যখন আপনি তাকে একটু বেশী শুনতে শুরু করলেন, তখন তাকে আরও ক্ষমতা দেওয়া শুরু করলেন। আপনি যদি তাকে এইভাবে শুনতে থাকেন তাহলে সে আপনাকে তার কাজের আদেশ করতে শুরু করবে। আপনি যখন এই অবস্থার মধ্যে পড়বেন যে আপনি বলছেন আমি কোনভাবে নিজেকে বাঁচাতে পারছিনা, আমি জানিনা যে কে আমাকে দিয়ে এই সমস্ত খারাপ কাজ করায়? আমি জানিনা যে কে আমাকে এই সকল করতে উস্কানি দেয়? কি কারণে আমি সেখানে যাই আমি তাও জানিনা। সে আমাকে বলে যাও লগইন কর ভয়ংকর অশ্লীল ওয়েবসাইট গুলিতে আর নোংরা জিনিসগুলি দেখতে উস্কানি দেয়, কেন সে আমাকে দিয়ে এইগুলি করায়? কেন আমি শেষ পর্যন্ত এই কাজগুলি করছি? কেন আমি আমার চোখ নিচু করতে পারছিনা যখন আমি লিফটে উঠি? কেন আমি আমার চোখ নিচু করতে পারছিনা যখন আমি রাস্তা দিয়ে হেটে যাই? আমি নিজেকে কোনভাবেই সাহায্য করতে পারছিনা এমনকি আমাকে কি করতে হবে তাও জানিনা। তখনই বুঝবেন শয়তান আপনাকে ভালভাবেই ধরেছে, সে আপনাকে বেশ শক্তভাবেই ধরেছে, সে ক্রমাগত আপনাকে গ্রাস করে ফেলেছে আর এটা শুধু খারাপ থেকে আরও খারাপ হতে থাকবে। আপনি এই জটিল সমস্যার সমাধানও খুঁজছেননা আর এটা আপনার ভিতরের আধ্যাত্মিকতাকে একেবারেই ধংস করে দিবে। আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্ক পুরপোরি নির্ভর করে পরিষ্কার হৃদয় এর উপরে। যতবারই আপনি নষ্টামি কর্মের মুখোমুখি হবেন আরও বেশী ময়ালা, আরও বেশী কালিমা, আপনার অন্তরকে পুরপোরিভাবে ঢেকে দিবে। এটা শুধু স্রোতের মত বাড়তে থাকবে, সেই সময় যদি আপনার সামনে আল্লাহর কথা বলা হয় আপনার চোখ দিয়ে একফোটা পানিও পড়বেনা। এটা হবার কারণ হল ওইসব প্রকাশিত অশ্লীলতার দরুন আপনার হৃদয় পাপে সম্পুর্ণরুপে শক্ত হয়ে গেছে। আপনি যে গুনাহ'র কাজগুলি করার জন্য আপনার চোখ জোড়া ব্যবহার করেছেন। এমনকি আপনি আর এটার জন্য মোটেও পরোয়া করেননা।
!
আপনি জানেন যে একটি ভাল হৃদয় যখন সে দেখে কোন খারাপ কাজ ঘটে গেছে, যা কিনা আল্লাহর হুকুমের বাইরে তখন সে অস্থির হয়ে ওঠে। এটা তাকে আকৃষ্ট করেনা। এটা তাকে বিরক্তিবোধ করায়। সে বলে উঠে না এটা ভুল, সংগে সংগেই তার সতর্ক মন জেগে উঠে, বিপদসংকেত বেজে উঠে। কিন্তু যখনই আপনি এই অবস্থায় চলে যাবেন যে আপনার মধ্যে কোন গুনাহ করার পরেও কোন অপরাধবোধ কাজ করছেনা, আপনি শুধু মনে করছেন এটা কিছুইনা, আপনি এটাকে ভুল বলেই মনে করছেননা। যখন আপনি কোন মেয়ের দিকে তাকাচ্ছেন তখন আপনি শুধু এটাকেই পাত্তা দিচ্ছেন যে কেউ আমাকে দেখে ফেলল কিনা। যখন দেখবেন কেউ আপনাকে দেখছেনা তখনই আপনি মেয়েটার দিকে ভালভাবে তাকাবেন। এটার অর্থ হল আল্লাহর ভয় আপনার মন থেকে চলে গেছে, আপনি শুধু ভয় পান যে জিনিষ দেখা যায় তাকে, অদেখা শক্তিকে আপনি ভয় পাননা। আপনি আপনার মনের কু-প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছেন। এটা হল একটি ভয়ংকর আধ্যাত্মিক দুরঅবস্থা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন-
“তোমরা চোখের মাধ্যমে যে সামান্য চুরি করে দেখ এবং অন্তরের গোপন বিষয় সম্পর্কে তিনি জানেন।” ৪০/সূরা আল-মু’মিন, আয়াত- ১৯)
“আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি।” (৫০/ সূরা ক্বাফ,আয়াত- ১৬)
“আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তারা মনের কু-প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি দায়িত্ব নিবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে?” (সূরা আল ফুরকান, আয়াত-৪৩,৪৪)

অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে। সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ। তারা জানে যা তোমরা কর।” (৮২/সূরা ইনফিতার, আয়াত-১০,১১)
!
এই দুরাবস্থা থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে প্রকৃত মুমিনদের কাতারে শামীল হতে হবে। কারন প্রকৃত মুমিনদের উপর শয়তানের কোন কর্তৃত্ব নেই। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করার বিপরিতে তার আয়াতসমূহ এড়িয়ে যায় তার পিছনে শয়তান লেগে যায়। কারন অন্তর যখন কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না সেই অন্তর যেন তালাবদ্ধ। সেই তালাবদ্ধ ও পরিত্যক্ত অন্তরে তখন প্রবেশ ঘটে শয়তানের এবং সে মনের আনন্দে নিষিদ্ধ কাজগুলো কেও আমাদের কাছে সুন্দর করে দেখায়। নিষিদ্ধ কাজগুলোকে তখন আর অসুন্দর লাগে না, মনে হয় "ইশ্! কি সুন্দর! ইশ্! কি আনন্দ!" মনে রাখবেন, পাপাসক্ত অন্তর কখনো পবিত্র ভালোবাসার সৌন্দর্যকে অনুভব করতে পারে না। যদি ফিরে পেতে চান হৃদয়ের শান্তি, যদি অনুভব করতে চান প্রিয়জনদের ভালোবাসা। আপনাকে শয়তানের ধোঁকা থেকে বেঁচে থেকে নিজের নফসের পশুত্বকে কুরবানি দিয়ে ফিরে আসতেই হবে। অবশ্যই পরকালীন জীবনের সাফল্যের আশায় আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় করতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন-
“যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত।” (সূরা আন নাযিয়াত, আয়াত ৩৫-৪১)
“অবশ্যই যারা আমার প্রকৃত মুমিন বান্দা হবে তাদের ওপর তোমার (শয়তান) কোন জোর খাটবে না। তোমার জোর খাটবে শুধুমাত্র এমন বিপথগামীদের ওপর যারা তোমার অনুসরণ করবে।” ১৫/সূরা আল-হিজর, আয়াত-৪২)
“কিন্তু সে তা (আমার আয়াতসমূহ) এড়িয়ে

সমাজের কতিপয় কুসংস্কার সমূহ

মানুষ স্পষ্ট হারাম কাজে জড়িয়ে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করে, এবং সাহায্য কামনা করে।

#যেমন:
.
আলহামদুলিল্লাহ আমার মেয়ে বাংলাদেশী আইডলে চান্স পেয়েছে। ইনশাআল্লাহ এবার ব্যাংকের জব হয়ে যাবে।"
.
ভাই দোয়া করবেন ব্যাংক থেকে এবার লোনটা যেন হয়ে যায়।
.
মা'সা'আল্লাহ, আন্টি আপনার মেয়ে তো দারুণ নাচতে জানে"...
হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ স্কুলের ডান্স প্রতিযোগিতায় সে প্রথম হয়েছে।
.
(এক ছেলে কলিগের স্ত্রীকে ইঙ্গিত করে) ভাবী, আর বইলেন না আপনি যে সুন্দর মাসা আল্লাহ।
.
ইনশাআল্লাহ এইবার যদি আর্জেন্টিনা ওয়াল্ড কাপ জিতে আমি এক হাজার টাকা দান করবো।।
.
মা'সা'আল্লাহ আপনার ছেলের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান দারুণ হয়েছিল - যা ডান্স করেছি জোয়ান বুড়ো সবাই। হ্যা দোয়া করবেন যেন দ্বিতীয় ছেলের বিয়েটাও এমন করে পালন করতে পারি,
.
(ছেলে-মেয়ে মিক্স ফ্রেন্ড সার্কেলকে উদ্দেশ্য করে) আলহামদুলিল্লাহ আমার ফ্রেন্ডসরা খুব হেল্প ফুল।
.
মাশাল্লাহ তোমাকে তো এমনিতেই সুন্দর দেখায়,
দাড়ি রাখবে কেন?
.
মাশাল্লাহ আমার মেয়েটা এত সুন্দরী যে সব মানুষ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে,
.
এক আঙ্কেল আমাকে বললেন, "শুনেছ অমুক ভাইয়ের ছেলের তো আল্লাহর রহমতে খ্রিস্টান মিশনারিতে চাকুরি হয়ে গেল, গাড়ি এসে তাকে নিয়ে যায়!
.
.
.
দাজ্জালের এক পাশে থাকবে জান্নাত, আরেক পাশে জাহান্নাম। আমরা দাজ্জালের জান্নাতেকেই আল্লাহর নেয়ামত মনে করতেছি। এখনই আমাদের এই অবস্থা, না জানি তার আগমন হলে কি হবে আমাদের।
.
#বিঃদ্রঃ এগুলো বলে কাউকে নিচু করা বা ব্যঙ্গ করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আসলেই আমাদের সমাজটা বিপরীত দিকে চলছে। তাই সমাজে প্রচলিত এসব কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কথাবার্তা থেকে আমারা
বিরত থাকবো।

মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে দ্বীনের সহীহ
 বুঝ দান করুন.... #আমিন

র্যান্ডের আত্মকাহানী



র্যান্ডের নাম শুনে অনেকে হয়তো নড়েচড়ে বসেছেন। আমেরিকান গ্লোবাল পলিসি থিঙ্কট্যাঙ্ক RAND Corporation এর মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক বিষয়ক পরামর্শ তৈরীর জন্য ২০০৩ সালে প্রকাশিত বিখ্যাত রিপোর্ট Civil Democratic Islam এর কথা হয়তো অনেকেই জানেন । এই রিপোর্টে বিশ্লেষক শেরিল বেনার্ড বিশ্বের মুসলিমদের মোটাদাগে চারটি এবং অধিকতর সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণে আটটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন। এই শ্রেণীগুলোর চিন্তাধারার পার্থক্য বোঝানোর জন্য মুসলিম বিশ্বে কতগুলো কনটেম্পরারি ইস্যুতে শ্রেণীগুলোর দৃষ্টিভঙ্গিগত প্রভেদ তারা তুলে ধরেছে। . সেগুলো কোন কোন ইস্যু? .

গণতন্ত্র, হিজাব, জিহাদ, সংখ্যালঘু অধিকার, ব্যক্তিস্বাধীনতা, নারী অধিকার, ইসলামী রাষ্ট্র, বহুবিবাহ ইত্যাদি। . মনে হচ্ছে না- বহুবিবাহ! সিরিয়াসলি!! এত এত জিনিস থাকতে র্যান্ডও পড়লো বহুবিবাহ নিয়ে!!! . অনেকে বলেন, সমাজে এত এত সুন্নাহ বাকি থাকতে কিছু লোক বহুবিবাহ নিয়ে আলাপ করে কেন। এদের আসলে র্যান্ডের কাছে প্রশ্ন করা উচিত, সালাত, সিয়াম, হাজ্জ, যাকাতের মতো ইসলামের একেবারে বুনিয়াদি সব বিধান বাদ দিয়ে হিজাব, জিহাদ, গণতন্ত্র দিয়ে তারা মুসলিমদের যাচাই করবে কেন। . কেন করবে, তারা বোঝে, বুঝি না আমরা। ইসলামের যতগুলো বিধান আছে সেগুলোর মধ্যে কিছু বিধানকে দুনিয়ার প্রায় সব মুসলিম কুরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে মানার পক্ষে। আর কতগুলো বিধান আছে যেগুলো এসে গেলে অনেকেই কুরআন সুন্নাহকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের যুক্তি, বিবেক ব্যবহার করে যুগ-সময়ের দোহাই দেয়। নিজের মতো মডার্নাইজ করার চেষ্টা করে। পার্থক্যগুলো তখনই তৈরী হয়। .

 যেমন আপনি কোনও মুসলিমকে দেখবেন না বলবে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ে সালাত পাঁচ ওয়াক্ত প্রয়োজন ছিল, এখন সময় বদলেছে, তিন ওয়াক্ত পড়লেই হয়। কিংবা আল্লাহ্র রাসূলের যুগে সাওম ছিল সূর্যাস্ত পর্যন্ত, এখন অত দীর্ঘক্ষণ না রাখলেও চলে। কেউ বলবে না। . কিন্তু দুনিয়াতে অজস্র মুসলিম আছে যারা বলবে জিহাদ জিনিসটা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে ধর্মীয় ও পলিটিক্যাল কারণে দরকার ছিল, এখন এর দরকার নেই। . এজন্য মুসলিমদের দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য তুলে ধরতে র্যান্ড মানদণ্ড হিসেবে এমন কতগুলো বিষয়গুলোকে সামনে এনেছে, যা নিয়ে খোদ মুসলিমরাই শতধাবিভক্ত, এবং একটা বড় অংশই এগুলো নিয়ে ডিফেন্সিভ মেন্টালিটিতে বাস করে। এমনই একটা বিষয় হলো বহুবিবাহ। . র্যান্ডের রিপোর্টে বহুবিবাহের ব্যাপারে মুসলিমদের ভাগগুলোর অবস্থান আমি সংক্ষিপ্তরূপে উল্লেখ করছি। আটটা শ্রেণী বলতে গেলে লেখাটা অনেক বড় হয়ে যাবে বিধায় আমি মূল চারটার কথা উল্লেখ করছি। . প্রথম শ্রেণীটি হচ্ছে, ফান্ডামেন্টালিস্ট তথা মৌলবাদী।

 এরা হচ্ছে সেসব মুসলিম যারা কুরআন-সুন্নাহর হুবহু অনুসরণকে মানবমুক্তির একমাত্র পথ মনে করে। এরা ইসলামকে সমাজের সবক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করতে চায় এবং ইসলামের বিধানগুলোর মধ্যে কোনওরকম পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন নিয়ে আসার পক্ষপাতী নয়। . এদের ব্যাপারে র্যান্ডের মূল্যায়ন: মৌলবাদীরা মুসলিম বিশ্বে আমেরিকার প্রধান বাধা। এরা পশ্চিমা গণতন্ত্র এবং মূল্যবোধের ঘোর বিরোধী। আমেরিকাকে তারা শত্রুজ্ঞান করে। এদেরকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলাটাই আমেরিকার জন্য কার্যকর স্ট্র্যাটেজি হবে। . র্যান্ডের রিপোর্টমতে, বহুবিবাহের ব্যাপারে মৌলবাদীদের অবস্থান: এরা বহুবিবাহকে একটা ভালো প্র্যাক্টিস মনে করে। এরা বিশ্বাস করে পশ্চিমা নৈতিকতা ব্যাভিচার, পরকীয়াসহ নানা অনাচারের জনক। এর বিপরীতে বহুবিবাহ অনেক কল্যাণকর একটি বিধান। . দ্বিতীয় শ্রেণীটি হচ্ছে, ট্রেডিশনালিস্ট। এই শ্রেণীতে আছে মুসলিম বিশ্বের বেশিরভাগ নরমপন্থী আলেম এবং সংস্কারপন্থী ইসলামিস্ট। তারা ইসলামকে মেনে চলতে চায় তবে মৌলবাদীদের মতো কঠোরভাবে নয়। .

এদের ব্যাপারে র্যান্ডের মূল্যায়ন: ট্রেডিশনালিস্টরা আমেরিকার জন্য সরাসরি হুমকিস্বরূপ না। এদের মধ্যে আধুনিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রসার ঘটানো সম্ভব। এদেরকে যেকোনমূল্যে মৌলবাদীদের সাথে একত্রিত হওয়া রোধ করতে হবে। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে এদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। . র্যান্ডের রিপোর্টমতে, বহুবিবাহের ব্যাপারে ট্রেডিশনালিস্টদের অবস্থান: এরা মনে করে বহুবিবাহ জায়েয, তবে অনেক শর্ত আছে। আর বহুবিবাহ জায়েয হলেও একবিবাহই উত্তম। ট্রেডিশনালিস্টদের মধ্যে যারা সংস্কারপন্থী তারা মনে করে রাষ্ট্রীয় আইন যদি অনুমোদন না করে তবে বহুবিবাহ বৈধ নয়। .

 তৃতীয় শ্রেণীটি হচ্ছে, মডার্নিস্ট। নামটা শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এরা ইসলামের আধুনিকায়নে বিশ্বাসী। ইসলামের অনেক বিধানের সরাসরি ইমপ্লিমেন্টেশানকে তারা বর্তমান সময়ে ইম্প্র্যাক্টিক্যাল মনে করে। কুরআন সুন্নাহর পরিবর্তে যুক্তি-বিবেক খাটিয়ে ইসলামের বিভিন্ন বিধানকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে। এরা ইসলামের বিভিন্ন ইস্যুতে ক্ল্যাসিক্যাল উলামাদের চেয়ে ভিন্নতর ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করে। এরা মনে করে





রে, মডার্নিজমের প্র্যাক্টিস ইসলামকে বরং শক্তিশালীই করবে। . এদের ব্যাপারে র্যান্ডের মূল্যায়ন: মডার্নিস্টরা মুসলিম বিশ্বে আমেরিকার সবচেয়ে মিত্রভাবাপন্ন। পশ্চিমা নৈতিকতা ও ধ্যানধারণার প্রসারে এরাই আমেরিকার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। তাই এদেরকে বেশি বেশি প্যাট্রনাইজ করা প্রয়োজন। ক্লাসিক্যাল উলামাদের বক্তব্যের পাশাপাশি মডার্নিস্টদের ব্যাখ্যাকেও মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। . র্যান্ডের রিপোর্টমতে, বহুবিবাহের ব্যাপারে মডার্নিস্টদের অবস্থান: মডার্নিস্টরা বহুবিবাহকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ের জন্য প্রযোজ্য প্রথা মনে করে, যার উপযোগিতা বর্তমান যুগে নেই। .

চতুর্থ শ্রেণীটি হচ্ছে, সেক্যুলার সম্প্রদায়। মুসলিম বিশ্বে যারা সেক্যুলার ধ্যানধারণা লালন করে, রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পৃথকীকরণের নীতিতে বিশ্বাসী, রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে ইসলামের হস্তক্ষেপের বিরোধী, তারাই এ শ্রেণীটির প্রতিনিধিত্ব করে। . এদের ব্যাপারে র্যান্ডের মূল্যায়ন: পশ্চিমা সেক্যুলার গণতন্ত্রের সাথে এদের মতাদর্শের গভীর সম্পর্ক আছে। সে হিসেবে আদর্শিকভাবে এরা মডার্নিস্টদের থেকেও আমেরিকার বড় মিত্র হবার কথা ছিল। কিন্তু অন্যান্য পার্সপেক্টিভে তাদের সাথে আমেরিকার কিছু বিরোধ রয়েছে। যেমন এদের বামপন্থী নীতি, আমেরিকাবিরোধী উগ্র জাতীয়তাবাদ ইত্যাদি। তা সত্ত্বেও, মৌলবাদীদের মোকাবিলায় সেক্যুলাররা একটা বড় শক্তি। . র্যান্ডের রিপোর্টমতে, বহুবিবাহের ব্যাপারে সেক্যুলারদের অবস্থান: এরা বহুবিবাহকে অনুমোদন করে না।

Ad Code

Responsive Advertisement